Computer Science and Engineering (CSE) Subject Review.
আসসালামু আলাইকুম শিক্ষার্থী বন্ধুরা। আশা করি ভালো আছো। তোমরা যারা ইউনিভার্সিটিতে এডমিশন টেষ্ট দিবে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় হলো সাবজেক্ট চয়েস। অনেকেই কি বিষয়ে পড়বে বুঝতে পারে না। তাই তোমাদের জন্যে এখানে নিয়ে এলাম সাবজেক্ট রিভিউ। আজকে আমরা CSE সাবজেক্ট এর রিভিউ করবো। CSE Subject review.
CSE কী?
বাংলাদেশে অত্যান্ত ডিমান্ডেবল ও জনপ্রিয় সাবজেক্টগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি নাম হলো CSE (Computer Science & Engineering)।এ এটি শুধু বাংলাদেশেই না সারা বিশ্বে জনপ্রিয়। কারন বর্তমান প্রযুক্তির যুগে কম্পিউটার সাইন্স ছাড়া চিন্তা করাও যায় না। তাই এই সাবজেক্ট এর কদর সারা বিশ্বেই রয়েছে । তাই সিএসই ইন্জিনিয়ারদের কদরই আলাদা। আর বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। তাই CSE ইন্জিনিয়ারিং এর গুরুত্বই আলাদা।
আরো পড়ুন : EEE Subject Review | ইইই সাবজেক্ট রিভিও.
CSE কেন পড়বেন এবং কারা আসবেন
আমরা আগেই জেনেছি যে CSE এর চাহিদা সারা বিশ্বজুরে বয়েছে । তাই এখানে অনেক ভালো
কিছু করতে গেলে সবার আগে যে জিনিসটা লাগবে সেটা হলো ধৈর্য। কারন এখানে ধৈর্য ধরে
কোডিং করতে হয়। তারপরে হলো দক্ষতা অর্জন। এখানে CGPA এতোটা ম্যাটার করেনা যদি
তোমার দক্ষতা ভালো থাকে। দক্ষতাই হলো প্রধান অশ্র। তোমাকে কোডিং এর মজাটা জানতে
হবে। তাছাড়া যদি তোমার কোডিং এর প্রতি ভালোবাসা থাকে তাহলেই হবে। এই CSE
সাবজেক্টটা ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাড়াও যে কোন পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ানো হলেও অন্যান্য সাবজেক্ট থেকে CSE সাবজেক্টটির অনেক বেশি
পার্থক্য রয়েছে। তাই CSE সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে সাবজেক্ট নেওয়াটা ঠিক না।
কারণ তোমাকে আগে দেখতে হবে যে তুমি এই সাবজেক্ট এর সাথে মানিয়ে নিতে পারবে কি না।
আর CSE এর সাথে অন্যান্য যে বিষয়গুলো আছে তাদের অনেকটা পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য
যে বিষয় গুলো আছে যেমন ইইই, সিভিল, টেক্সটাইল ইত্যাদি সবজেক্টগুলোর যেকোনো
ইন্ডাস্ট্রিতে জব পেতে হলে সবার আগে প্রয়োজন হয় একটি জিনিসের, সেটি হলো সিজিপিএ।
এখানে যার সিজিপিএ বেশি হয় তার ডিমান্ড থাকে আলাদা।এছাড়া অনেক সময় ভাল সিজিপিএ
থাকলেও কিছু ক্যান্ডিডেট থাকে যাদের আত্মীয় থাকে, তাই তারা সহজেই ভালো সিজিপিএ
ছাড়াই জব পেয়ে থাকে। এই লোকদের ভীড়ে সিজিপিএ এর খবরও থাকে না।
কিন্তু খুশির খবর হচ্ছে এক্ষেত্রে CSE এর একটা সুবিধা আছে। যেমন তোমার সিজিপিএ
যদি ২ ও হয়, অনেকগুলো ড্রপ কোর্স থাকে অথবা সার্টিফিকেটও যদি না থাকে তবুও চিন্তা
নেই।কারণ আমরা আগেই জেনেছি সিএসই তে দক্ষতার মূল্যায়ন করা হয়। ক্রিয়েটিভিটি
এখানে প্রধান। কিন্তু তোমার ইচ্ছা থাকতে হবে প্রোগ্রামিং করার জন্য । রাত দিন বসে
যদি কোডিং করার ধৈর্য্য থাকে তাহলে তুমি সিজিপিএ, সার্টিফিকেট ও ছাড়াই দক্ষতা
দিয়েই তোমার ইন্ডাস্ট্রি তে টপ লেভেলের চাকরিজীবী হতে পারবে। এজন্যে থাকতে হবে
তোমরা ক্রিয়েটিভিটি ও দক্ষতা। তবে এক্ষেত্রে যদি তোমার সফটওয়্যার ডেভলপিং, কোডিং
এর প্রতি প্যাশন না থাকে তবে CSE এর দিকে না আসলেই তোমার ফিউচারের জন্য ভাল হবে।
তাছাড়া প্যাশন না থাকা সত্ত্বেও CSE পড়তে চাইলে চার বছর শিক্ষাজীবনের লাইফটা খুবই
বাজে যাবে এবং ফাইনাল ইয়ারে থিসিস করার জন্য টপিক খুজে পাবেনা। তাই তোমার মন কি
বলে সেটা শুন, সিএসই তে পড়বে কি পাড়বে না।
তাই CSE নেওয়ার আগে তোমাকে ভালোবেসে এই সাবজেক্টটি চয়েস করতে হবে। না হলে বড়
বিপদে পড়তে হরে। তোমার যদি ধৈর্য থাকে কোডিং করার তাহলেই বেছে নিতে পারো এই
সাবজেক্ট। অন্যথায় নয়
CSE পড়তে যে যে দক্ষতা লাগে
বাংলাদেশ ও বিশ্বে CSE এর চাহিদা
সবকিছু মিলিয়ে বর্তমান বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। তই এই ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার সিএসই ইন্জিনিয়ার। বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের উন্নয়ন প্রকল্প প্রযুক্তির মাধ্যমেই হচ্ছে। এর সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হলো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। আমাদের দেশে এখনো চাহিদার তুলনায় দক্ষ কম্পিউটার সায়েন্স ইন্জিনিয়ার গ্র্যাজুয়েট অনেক কম। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। তাই প্রতিটি সেক্টরেরই দরকার পড়ছে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর। সেই সাথে সাথে বাংলাদেশ শিল্পে আধুনিকায়ন হচ্ছে। পরমাণু শক্তি কমিশন, Satellite Transmission থেকে Traffic Controlling, E-governance, রেল যোগাযোগ সহ সকল ক্ষেত্রেই কম্পিউটার এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। ফলে সকল ক্ষেত্রেই CSE এর চাহিদা প্রচুর। এর ফলে তৈরি হচ্ছে অফুরন্ত কর্মক্ষেত্র। তাই একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর কোনো ভয় নেই যে সে কর্মক্ষেত্রে সফল হতে পারবে না।
CSE এর কাজের জায়গা
- বিভিন্ন ফার্মে Software Engineer & Programmer, IT Professional হতে পারবে।
- সামরিক বাহিনী কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসেবে যোগ দিতে পারবে।
- সকল আধুনিক শিল্পকারখানায় প্রসেস কন্ট্রোলিং এ যোগ দিতে পারবে।
- সরকারী বিভিন্ন বিভাগ- যেমন বিদ্যুৎজনস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, উন্নয়ন অধিদপ্তর, পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ড, গণপূর্ত বিভাগ, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রভৃতিতে কম্পিউটার প্রকৌশলী হিসেবে।
- Nasa, সার্নের মত বিভিন্ন বিখ্যাত গবেষনা ইন্সটিটিউটে। এছাড়া সরকারী ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা তো আছেই।
- Network Administration, System Analyst.
- Web Mastering & Developing Company
- Graphics Designer.
- Film Industry তে Simulation & Animation ডিরেক্টর।
- Microsoft, Google, Yahoo, Facebook, Intel এর মত জায়ান্ট কোম্পানিগুলোতে।
- বিভিন্ন টেলিকমিউনিকেশন কম্পানিতে।
CSE তে অন্যান যে বিষয়গুলো আছে
App and Games developer
এপ এবং গেম তৈরি করা হলো কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিষয় ও কাজ। CSE স্টুডেন্ট যারা আছে তারা অতি সহজেই অন্যের বানানো গেম কিংবা অ্যাপের নিজের মত ডেভলপিং থেকে শুরু করে নিজের প্রয়োজনমত অ্যাপ, গেম, ওয়েব বানিয়ে ফেলতে পারে।
আরো পড়ুন : What is Chemistry.The Scope of Chemistry..
রোবোটিক্স
বর্তমানে রোবোটিক্স দারুন একটা বিষয়।বর্তমানে রোবটের ব্যবহার বাড়ছে।তেমনি ভাবে বাড়ছে মানুষের রোবটের প্রতি নির্ভরশীলতা ও বাড়ছে। আর এখানেই প্রোগ্রামিং এর জন্য দরকার হচ্ছে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রতিযোগিতার এ যুগে প্রোগ্রামিং শিখে তুমি বানিয়ে ফেলতে পারো তোমার শখের রোবটটি। তুমি বানিজ্যিকভাবে রোবটিক্স প্রোগ্রামিং নিয়ে কাজ করে নিজেকে অনেক বড় একটি প্লাটফর্মে তৈরি করাতে পারো। তোমার প্রোগ্রামিং কোয়ালিটির জন্য তুমি গুগল, মাইক্রোসফটে জব পেয়ে যেতে পারো।বাংলাদেশ থেকে অনেকেই পেয়েছেন।
CSE এর আরো সুবিধা
তোমার যদি ইচ্ছে থাকে CSE পড়ার তাহলে তোমার জন্য একটা সুখবর যে হলো অন্যান্য
বিষয়ের স্কলারশীপ নিয়ে বিদেশে পড়াশুনা করার চেয়ে CSE তে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক
বেশি। Massachusetts Institute of Technology (MIT), Harvard University, The
University of Melbourne, University of California at Berkeley (UCB)
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো CSE এর স্টুডেন্ট দের স্কলারশীপ দিয়ে থাকে।
তাহলে আজকে এই পর্যন্ত ই। তোমরা যদি আরো কোনো সাবজেক্ট এর রিভিউ জানতে চাও
তাহলে সাবজেক্ট এর নাম লিখে কমেন্ট করতে পারো।